বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের জয়।

chittagong vikings

 

সুশৃঙ্খল ও শুদ্ধ ক্রিকেটের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের যাত্রা শুরু। তবে বিপিএলের তৃতীয় আসরের প্রথম দিন হতেই যেন শৃঙ্খলা ভঙ্গের রীতি শুরু হয়েছে। গতকাল বিপিএলে ছিল সিলেট সুপার স্টারস ও চিটাগং ভাইকিংসের ম্যাচ। সিলেট সুপার স্টারসে অন্তর্ভুক্ত বিদেশি খেলোয়াররা হল শ্রীলঙ্কার দিলশান মুনাবীরা, অজন্তা মেন্ডিস সেই সাথে আছেন ইংল্যান্ডের তিন খেলোয়ার রবি বোপারা, জশুয়া কব এবং ওয়াইজ শাহ। ইংল্যান্ডের তিন খেলোয়ারের অনাপত্তিপত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালায় ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা। কিন্তু তারা রাজি না হওয়ায় ইংল্যান্ডের তিন ক্রিকেটারকে বাদ দিয়েই ১৬ খেলোয়ারের তালিকা জমা দেয় মুশফিকুর রহিম। এই তালিকা অনুসারে দেখা যায় বিপিএলের নিয়ম অনুসারে একটা দলে চারজন ক্রিকেটার থাকার কথা থাকলেও ছিল মাত্র শ্রীলংকান দুজন ক্রিকেটার।কিন্তু টস হওয়ার পর মাঠে নেমে দেখা যায় বিপরীত চিত্র। শ্রীলংকার খেলোয়ারদের সাথে মাঠে নামলো রবি বোপারা ও জশুয়া কব। কারো সাথে আলোচনা না করে মাঠের এই অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে আসেন চিটাগং ভাইকিংসের তামিম ইকবাল ও তিলক রত্নে দিলশান। ড্রেসিং রুমের সামনে তামিম ইকবাল যখন সতীর্থদের সাথে বসে অপেক্ষা করছেন তখন ঘটে গেলো আরেক নাটকীয় ঘটনা। এবং ক্রিকেটের জন্য লজ্জারও বটে। সে মুহূর্তে সিলেটের সুপার স্টারসের মালিকের সাথে কথা কাটাকাটি হয় তামিম ইকবালের। তামিমের অভিযোগ সিলেট সুপার স্টারসের মালিক তার সাথে বাবা-মা তুলে গালি দিয়েছে। কিন্তু সিলেট দলের মালিক আজিজুল হকের ছেলে আজিমুল তীর ছুড়লো উল্টো তামিমের দিকেই। তার মতে তার বাবার সাথে তামিমই এরকম ব্যাবহার করেছে, তাদের কাছে নাকি ভিডিও ফুটেজ আছে। এমনকি বিসিবির কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছে তারা তামিমের বিরুদ্ধে। তামিমের ভাষ্য মতে টাকা থাকলেও সিলেট সুপার স্টারসের মালিক একজন জাতীয় দলের খেলোয়ারের সাথে ভিখারীর মত আচরণ করতে পারেন না।
তর্কাতর্কি, বিশৃঙ্খলায় বেলা দুটার খেলা গড়িয়ে তিনটা দশে গড়ায়।
খেলার শুরুতেই ব্যাটিং দিয়ে যাত্রা শুরু করে চিটাগং ভাইকিংস। তামিম খেলে ফেলেন ছয় বাউন্ডারী ও চারটি ছক্কার সমন্বয়ে ৪৫ বলে ৬৯ রানের তার ব্যাক্তিগত বিপিএল সেরা ইনিংস। তামিমের ছয় বাউন্ডারীর চারটিই এসেছে পঞ্চম ওভার থেকে। ম্যাচের স্কোরকে দীর্ঘায়িত করতে ইয়াসির আলী চৌধুরী কম যাননি। তারও সংগ্রহ ৫২ বলে ৬৩ রানের ইনিংস। দিলশান মুনাবীরার বোলিং থেকে রান কেড়ে নিতে পিছু পা হননি জিয়াউর রহমান ও ইয়াসির। উনিশতম ওভারে ইয়াসির ও জিয়ার ছক্কার সংখ্যা যথাক্রমে দুটি ও একটি। জিয়া ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। মোট ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে চিটাগং ভাইকিংস ১৮০ রান সংগ্রহ করেন।
বোলিংয়ের ক্ষত কাটিয়ে দেয়ার জন্যই কিনা দিলশান মুনাবীরা ৩০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন। লড়াইটা কেবল একা করেননি তিনি। সিলেট সুপার স্টারস এর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম খেলার শেষ পর্যন্ত দলকে টেনে নিয়ে যান। বোলার যখন মোহাম্মদ আমির তখন রান নেয়া কিছুটা কঠিন এমনিতেও।সিলেট সুপার স্টারসের প্রয়োজন ছিল নয় রান। শেষ ওভারে আমির দুটি ডট বল দিলেও মুশফিক পর পর দুই বলে দুই রান ও পঞ্চম বলে কাভার ড্রাইভে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল তিন রান। কিন্তু এবার আর সম্ভব হল না। সিলেট অধিনায়ক মুশফিক এক রান নিয়েই পরাজয় নিশ্চিত করলেন।
শেষ পর্যন্ত দর্শকরা একটা নাটকীয় ম্যাচের স্বাদ পেলেন তবে এই বিশৃঙ্খলা নিশ্চয়ই পরবর্তী ম্যাচে দেখতে চাইবেন না ক্রিকেটের দর্শক।

আপনার মতামত দিন