মাশরাফি বিন মর্তুজা।

 

মাশরাফির

মাশরাফি বিন মর্তুজা বাংলাদেশ ক্রিকেট এক কিংবদন্তীর নাম। বাংলাদেশ ক্রিকেটে জার অবদান অপরিসীম। মাশরাফি বিন মর্তুজা ১৯৮৩ সালে ৫ অক্টোবর যশোর জেলার নড়াইলে জন্ম গ্রহন করেন।মাশরাফি বিন মর্তুজার ডাকনাম কৌশিক। স্থানীয় লকেরা তাকে নড়াইল এক্সপ্রেস নামেই ডাকতেন। বর্তমানে সংক্ষিপ্ত ভাবে “ম্যাশ” নামে বেশী পরিচিত। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি (১.৯১ মিটার) উচ্চতা দেহের এই খেলোয়াড়ের ব্যাটিংয়ের ধরণ ডানহাতি, আর বোলিংয়ের ধরণ ডানহাতি, মিডিয়াম ফাস্ট তবে বর্তমানে বোলার হিসাবে তিনি বিশেষ ভাবে পরিচিত।

“ম্যাশ” এর টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ৮ নভেম্বর ২০০১ জিম্বাবুয়ের বিপরিতে। এবং ওডিআই অভিষেক ২৩ নভেম্বর ২০০১ জিম্বাবুয়ের সাথে। ২৮ নভেম্বর ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের সাথে টি২০আই অভিষেক ঘটে।

 

একনজরে মাশরাফি বিন মর্তুজার ব্যক্তিগত জীবন।

মাশরাফি বিন মর্তুজা

মাশরাফির জন্ম বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের নড়াইল জেলায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি গতানুগতিক পড়াশোনার পরিবর্তে ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন খেলতেই বেশি পছন্দ করতেন, তাছাড়া মাঝে মধ্যে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটা। তারুণ্যের শুরুতে মাশরাফি বিন মর্তুজা ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ জন্মে, বিশেষত ব্যাটিংয়ে যদিও এখন বোলার হিসেবেই তিনি বেশি খ্যাত। যেজন্যে তাকে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামেও অভিহিত করা হয়। বাইক প্রিয় মর্তুজাকে সবাই খুব হাসিখুশি আর উদারমনের মানুষ হিসেবেই জানেন। প্রায়ই তিনি বাইক নিয়ে স্থানীয় ব্রিজের এপার-ওপার চক্কর মেরে বেড়ান। নিজের শহরে নড়াইলে তিনি প্রচণ্ড রকমের জনপ্রিয়। এখানে মাশরাফি বিন মর্তুজা “প্রিন্স অব হার্টস” বলা হয়। এ শহরেরই সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়ার সময় সুমনা হক সুমির সাথে তার পরিচয় হয়। দু’জনে ২০০৬ সালে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন।

 

একনজরে মাশরাফি বিন মর্তুজার প্রাথমিক ক্যারিয়ার।

মাশরাফি বিন মর্তুজা

বাংলাদেশের সফলতম পেস বোলারদের একজন হলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। অনূর্ধ-১৯ দলে থাকতেই তিনি “ওয়েস্ট ইন্ডিজ” সাবেক ফাস্ট বোলার “অ্যান্ডি রবার্টসের” নজর কেড়েছিলেন তার আক্রমণাত্মক, গতিময় বোলিং দিয়ে। “অ্যান্ডি রবার্টসের” তখন দলটির অস্থায়ী বোলিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন। “অ্যান্ডি রবার্টসের” পরামর্শে মাশরাফি বিন মর্তুজা বাংলাদেশ এ-দলে নেয়া হয়। জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করতে তাকে বেশী কষ্ট করতে হয়নি। বাংলাদেশ এ-দলের হয়ে একটিমাত্র ম্যাচ খেলেই তিনি এ সুজগ লাভ করেন। ২০০১ সালে ৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তার অভিষেক ঘটে। অভিষেকেই তিনি ১০৬ রান দিয়ে ৪টি উইকেট লাভ করেন। গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ছিলেন তার প্রথম শিকার। মজার ব্যাপার হল, মাশরাফির প্রথম ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচও ছিল এটি। ব্যক্তিগত তৃতীয় টেস্ট খেলার সময় তিনি হাঁটুতে আঘাত পান। এর ফলে তাকে প্রায় দু’বছর ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয়েছিলো। তিনি আবারো স্বরুপে ফেরার ঘোষনা দেন ভারতের বিরুদ্ধে খেলার সময় রাহুল দ্রাবিড়কে অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের একটি বলে আউট করে ২০০৪ সালে। বাংলাদেশ-ভারত সিরিজে তিনি ধারাবাহিকভাবে বোলিং করেন এবং তেন্ডুলকর ও গাঙ্গুলীকে আউট করার সুযোগ পান। যদিওবা ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তিনি আরো কিছু মূল্যবান উইকেট পাননি। এই সিরিজের একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় জয়ের নায়ক ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাশরাফিকে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ১১ বার দলের বাইরে চোটের কারণে। ২০১১ সালে চোটই তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। চোটের কারণে অপারেশন টেবিলে তাকে যেতে হয়েছে সাতবার। এরপরও দেশকে ভালোবেসে খেলে যাচ্ছেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম নির্ভীক এই ক্রিকেটার।

 

একনজরে মাশরাফি বিন মর্তুজার অধিনায়কের দায়িত্ব।

 

২০০৯ সালের শুরুতে মোহম্মদ আশরাফুলের সহকারী অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে তিনি হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন। যদিওবা ঐ খেলায় বাংলাদেশ জয়লাভ করে কিন্তু মাশরাফি এই চোটের কারনে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠের বাইরে ছিলেন। পরবর্তীতে আবার ২০১৪ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের সাথে হোম সিরিজে অধিনায়কত্ব পান “ম্যাশ”

ক্যাটাগরি ম্যাচের সংখ্যা জয় পরাজয় ড্র
টেস্ট
ওডিআই ১৬ ১১

 

মাশরাফি বিন মর্তুজার ভারতের সাথে খেলায় প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার পান ১৮–২২ মে ২০০৭ সালে বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামে। তিনি ব্যাটিং এ করেন ৭৯ রান আর বোলিং: ৪/৯৭ এবং ১/৩৬।

 

মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্রিকেট পরিসংখ্যান

প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৬ ১৪৮ ২৮ ৫৪
রানের সংখ্যা ৭৯৭ ১,৩৭৩ ২৬২ ১,৪৩৩
ব্যাটিং গড় ১২.৮৫ ১৪.৯২ ১৮.৭১ ১৬.১০
১০০/৫০ ০/৩ ০/১ ০/০ ১/৬
সর্বোচ্চ রান ৭৯ ৫১* ৩৬ ১৩২*
বল করেছে ৫,৯৯০ ৭,৩৮৭ ৬২৭ ৮,৬৭৩
উইকেট ৭৮ ১৮৯ ২৬ ১২৯
বোলিং গড় ৪১.৫২ ৩০.৫০ ৩৩.৫৩ ৩৫.১৯
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৬০ ৬/২৬ ৪/১৯ ৪/২৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৯/– ৪৫/– ৩/– ২৩/–

 

 

 

 

 

 

 

একটি মতামত

  1. Bengali Tutorials June 4, 2016

আপনার মতামত দিন